Future Predictions of Shah Neyamatullah – শাহ নেয়ামতুল্লাহর ভবিষ্যদ্বানী

Future Predictions of Shah Neyamatullah – শাহ নেয়ামতুল্লাহর ভবিষ্যদ্বানী

খোদা প্রদত্ত ইলহাম এর জ্ঞান দ্বারা আজ থেকে প্রায় সাড়ে আটশত বছর পুর্বে ( হিজরী ৫৪৮ সাল মোতাবেক ১১৫২ সালে খ্রিস্টাব্দে) শাহ নেয়ামতুল্লাহ রহঃ তার বিখ্যাত কাব্যগুলো রচনা করেন। হযরত শাহ্ নেয়ামতউল্লাহ রহঃ ছিলেন একজন ওলী আল্লাহ। এটি লিখার পর থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত প্রতিটি ভবিষ্যদ্বানী হুবহু মিলে গিয়েছে। ব্রিটিশ বড় লাট লর্ড কার্জনের শাসনামলে (১৮৯৯-১৯০৫) এর প্রচার নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।  নিম্নে তার বিখ্যাত ভবিষ্যদ্বানী দেয়া হলঃ —–

(১) পশ্চাতে রেখে এই ভারতের অতীত কাহিনী যত আগামী দিনের সংবাদ কিছু বলে যাই অবিরত

টীকা: ভারত= ভারতীয় উপমহাদেশ

(২) দ্বিতীয় দাওরে হুকুমত হবে তুর্কী মুঘলদের কিন্তু শাসন হইবে তাদের অবিচার যুলুমের

 টীকাঃ দ্বিতীয় দাওর= ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিম শাসনের দ্বিতীয় অধ্যায়। শাহবুদ্দীন মুহম্মদ ঘোরি রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার আমল (১১৭৫ সাল) থেকে সুলতান ইব্রাহীম লোদীর শাসনকাল (১৫২৬ সাল) পর্যন্ত প্রথম দাওর। এবং সম্রাট বাবর শাসনকাল (১৫২৬ সাল) থেকে ভারতে মুসলিম দ্বিতীয় দাওর।

 (৩) ভোগে ও বিলাসে আমোদে-প্রমোদে মত্ত থাকিবে তারা হারিয়ে ফেলিবে স্বকীয় মহিমা তুর্কী স্বভাব ধারা  টীকা: মুঘল শাসকদের অনেকই আল্লাহ ওয়ালা ছিলেন। তবে কেউ কেউ প্রকৃত ইসলামী আইনকানুন ও শরীয়তি আমল থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন। আর হাদীস শরীফেই আছে: যখন মুসলমানরা ইসলাম থেকে দূরে সরে যাবে, তখন তার উপর গজব স্বরূপ বহিশত্রুকে চাপিয়ে দেয়া হবে।

(৪) তাদের হারায়ে ভিন দেশী হবে শাসন দণ্ডধারী জাকিয়া বসিবে, নিজ নামে তারা মুদ্রা করিবে জারি  টীকাঃ ভিন দেশী= ইংরেজদের বোঝানো হয়েছে

(৫) এরপর হবে রাশিয়া-জাপানে ঘোরতর এক রণ রুশকে হারিয়ে এ রণে বিজয়ী হইবে জাপানীগণ

(৬) শেষে দেশ-সীমা নিবে ঠিক করে মিলিয়া উভয় দল চুক্তিও হবে, কিন্তু তাদের অন্তরে রবে ছল  টীকা: বিশ শতকের প্রারম্ভে এ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। জাপান কোরিয়ার উপর আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে পীত সাগর, পোট অব আর্থার ও ভলডিভস্টকে অবস্থানরাত রুশ নৌবহরগুলো আটক করার মধ্য দিয়ে এ যুদ্ধ শুরু হয়। অবশেষে রাশিয়া জাপানের সাথে চুক্তি করতে বাধ্য হয়।

(৭) ভারতে তখন দেখা দিবে প্লেগ আকালিক দুর্যোগ মারা যাবে তাতে বহু মুসলিম হবে মহাদুর্ভোগ

টীকা: ১৮৯৮-১৯০৮ সাল পর্যন্ত ভারতে মহামারী আকারে প্লেগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। এতে প্রায় ৫ লক্ষ লোকের জীবনাবসান হয়। ১৭৭০ সালে ভারতে মহাদুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয়। বংগ প্রদেশে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এ থেকে উদ্ভুত মহামারিতে এ প্রদেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ প্রাণ হারায়।

(৮) এরপর পরই ভয়াবহ এক ভূকম্পনের ফলে জাপানের এক তৃতীয় অংশ যাবে হায় রসাতলে

টীকা: ১৯৪৪ সালে জাপানের টোকিও এবং ইয়াকুহামায় প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্প সংঘটিত হয়।

(৯) পশ্চিমে চার সালব্যাপী ঘোরতর মহারণ প্রতারণা বলে হারাবে এ রণে জীমকে আলিফগণ

 টীকা: ১৯১৪-১৯১৮ সাল পর্যন্ত চার বছরাধিকাল ধরে ইউরোপে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হয়। জীম= জার্মানি, আলিফ=ইংল্যান্ড।

(১০) এ সমর হবে বহু দেশ জুড়ে অতীব ভয়ঙ্কর নিহত হইবে এতে এক কোটি ত্রিশ লাখ নারী-নর

টীকা: ব্রিটিশ সরকারের তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ি প্রথম মহাযুদ্ধে প্রায় ১ কোটি ৩১ লক্ষ লোক মারা যায়।

(১১) অতঃপর হবে রণ বন্ধের চুক্তি উভয় দেশে কিন্তু তা হবে ক্ষণভঙ্গুর টিকিবে না অবশেষে

টীকা: ১৯১৯ সালে প্যারিসের ভার্সাই প্রাসাদে প্রথম মহাযুদ্ধের অবসানের লক্ষ্যে ‘ভার্সাই সন্ধি’ হয়, কিন্তু তা টিকেনি।

(১২) নিরবে চলিবে মহাসমরের প্রস্তুতি বেশুমার ‘জীম’ ও আলিফে খ- লড়াই ঘটিবে বারংবার

(১৩) চীন ও জাপানে দু’দেশ যখন লিপ্ত থাকিবে রণে নাসারা তখন রণ প্রস্তুতি চালাবে সঙ্গোপনে

টীকা: নাসারা মানে খ্রিষ্টান

(১৪) প্রথম মহাসমরের শেষে একুশ বছর পর শুরু হবে ফের আরো ভয়াবহ দ্বিতীয় সমর

টীকা: ১ম মহাযুদ্ধ সমাপ্তি হয় ১৯১৮ সালের ১১ নভেম্বর, এবং দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে সূচনা হয় ১৯৩৯ সালে ৩রা সেপ্টেম্বর। দুই যুদ্ধের মধ্যবর্তী সময় প্রায় ২১ বছর।

(১৫) হিন্দ বাসী এই সমরে যদিও সহায়তা দিয়ে যাবে তার থেকে তারা প্রার্থিত কোন সুফল নাহিকো পাবে  টীকা: ভারতীয়রা ব্রিটিশ সরকারের প্রদত্ত যে সকল আশ্বাসের প্রেক্ষিতে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে তাদের সহায়তা করেছিল, যুদ্ধের পর তা বাস্তবায়ন করেনি।

(১৬) বিজ্ঞানীগণ এ লড়াইকালে অতিশয় আধুনিক করিবে তৈয়ার অতি ভয়াবহ হাতিয়ার আনবিক

টীকা: মূল কবিতায় ব্যবহৃত শব্দটি হচ্ছে ‘আলোতে বকর’ যার শাব্দিক অর্থ বিদ্যুৎ অস্ত্র, অনুবাদক বিদ্যুৎ অস্ত্রের পরিবর্তে ‘আনবিক অস্ত্র তরজমা করেছেন। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে আমেরিকা হিরোসিমা-নাগাসাকিতে আনবিক বোমা নিক্ষেপ করে। এতে লাখ লাখ বেসামরিক লোক নিহত হয়। কবিতায় বিদ্যুৎ অস্ত্র বলতে মূলত আনবিক অস্ত্রই বুঝানো হয়েছে।

(১৭) গায়েবী ধনির যন্ত্র বানাবে নিকটে আসিবে দূর প্রাচ্যে বসেও শুনিতে পাইবে প্রতীচীর গান-সুর

টীকা: গায়েবী ধনীর যন্ত্র রেডিও-টিভি

(১৮) মিলিত হইয়া ‘প্রথম আলিফ’ ‘দ্বিতীয় আলিফ’ দ্বয় , গড়িয়া তুলিবে রুশ-চীন সাথে আতাত সুনিশ্চয়

(১৯) ঝাপিয়ে পড়িবে ‘তৃতীয় আলিফ’ এবং দু’জীম ঘারে ছুড়িয়া মারিবে গজবী পাহাড় আনবিক হাতিয়ারে।

টীকা: প্রথম আলিফ= ইংল্যান্ড দ্বিতীয় আলিফ=আমেরিকা তৃতীয় আলিফ= ইটালি দুই জীম=জার্মানি ও জাপান  (প্যারা: ১৯- এর শেষ) অতি ভয়াবহ নিষ্ঠুরতম ধ্বংসযজ্ঞ শেষে প্রতারণা বলে প্রথম পক্ষ দাড়াবে বিজয়ী বেশে

(২০) জগৎ জুড়িয়া ছয় সালব্যাপী এই রণে ভয়াবহ হালাক হইবে অগিণত লোক ধন ও সম্পদসহ

টীকা: জাতিসংঘের হিসেব মতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রায় ৬ কোটি লোক মারা গিয়েছিল।

(২১) মহাধ্বংসের এ মহাসমর অবসানে অবশেষে নাসারা শাসক ভারত ছাড়িয়া চলে যাবে নিজ দেশে কিন্তু তাহারা চিরকাল তরে এদেশবাসীর মনে মহাক্ষতিকর বিষাক্ত বীজ বুনে যাবে সেই সনে

 টীকা: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয় ১৯৪৫ সালে, আর ভারত উপমহাদেশ থেকে নাসারা তথা ইংরেজ খ্রিস্টানরা চলে যায় ১৯৪৭ এ। এই প্যারার দ্বিতীয় অংশের ব্যাখ্যা দুই রকম আছে।

ক) এই অঞ্চলের বিভেদ তৈরী জন্য ইংরেজ খ্রিস্টানরা কাশ্মীরকে হিন্দুদের দিয়ে প্যাচ বাধিয়ে যায়।

 খ) ইংরেজরা চলে গেলেও তাদের সংস্কৃতি এমনভাবে রেখে গেছে যে এই উপমহাদেশে লোকজন এখনও সব যায়গায় ব্রিটিশ নিয়ম-কানুন-ভাষা-সংস্কৃতি অনুসরণ করে। ** অনেকে এই ক্ষতিকর বিজ বলতে লা-মাযহাবী তথা আহলে হাদীস এবং কাদিয়ানী গোষ্ঠী মন্তব্য করেছেন।

(২২) ভারত ভাঙ্গিয়া হইবে দু’ভাগ শঠতায় নেতাদের মহাদুর্ভোগ দুর্দশা হবে দু’দেশেরি মানুষের

 টীকা: দেশভাগের সময় মুসলমানরা আরো অনেক বেশি এলাকা পেত। কিন্তু সেই সময় অনেক মুসলমান নেতার গাদ্দারির কারণে অনেক মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা হিন্দুদের অধীনে চলে যায়। ফলে কষ্টে পরে সাধারণ মুসলমানরা। এখনও ভারতের মুসলমানরা সেই গাদ্দারির ফল ভোগ করছে।

(২৩) মুকুটবিহীন নাদান বাদশা পাইবে শাসনভার কানুন ও তার ফর্মান হবে আজেবাজে একছার

টীকা: এই প্যারা থেকে ভারত বিভাগ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ধরা যায়। এই সময় এই অঞ্চলে মুসলমানদের ঝান্ডাবাহী কোন সরকার আসেনি। **মুকুটবিহীন নাদান বাদশাহ বলতে অনেকে ‘গণতন্ত্র’কে বুঝিয়েছে। আব্রাহাম লিংকনের তৈরী গণতন্ত্রকে জনগণের তন্ত্র বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে তা হচ্ছে জন-নিপীড়নের তন্ত্র। এই গণতন্ত্রের নিয়ম কানুন যে আজেবাজে সে সম্পর্কে শেষ লাইনে ইঙ্গিত করা হয়েছে।

(২৪) দুর্নীতি ঘুষ কাজে অবহেলা নীতিহীনতার ফলে শাহী ফর্মান হবে পয়মাল দেশ যাবে রসাতলে  টীকা: সমসাময়িক দুর্নীতি বুঝানো হয়েছে।

(২৫) হায় আফসোস করিবেন যত আলেম ও জ্ঞানীগণ মূর্খ বেকুফ নাদান লোকেরা করিবে আস্ফালন।

(২৬) পেয়ারা নবীর উম্মতগণ ভুলিবে আপন শান ঘোরতর পাপ পঙ্গিলতায় ডুবিবে মুসলমান

(২৭) কালের চক্রে স্নেহ-তমীজের ঘটিবে যে অবসান লুণ্ঠিত হবে মানী লোকদের ইজ্জত সম্মান

(২৮) উঠিয়া যাইবে বাছ ও বিচার হালাল ও হারামের লজ্জা রবে না, লুণ্ঠিত হবে ইজ্জত নারীদের

(২৯) পশুর অধম হইবে তাহারা ভাই-বোনে, মা-বেটায় জেনা ব্যাভিচারে হইবে লিপ্ত পিতা আর কন্যায়

(৩০) নগ্নতা আল অশ্লীলতায় ভরে যাবে সব গেহ নারীরা উপরে সেজে রবে সতী ভেতরে বেচিবে দেহ

(৩১) উপরে সাধুর লেবাস ভেতরে পাপের বেসাতি পুরা নারী দেহ নিয়ে চালাবে ব্যবসা ইবলিস বন্ধুরা

(৩২) নামায ও রোজা, হজ্জ্ব যাকাতের কমে যাবে আগ্রহ ধর্মের কাজ মনে হবে বোঝা দারুন দুর্বিষহ

(৩৩) কলিজার খুন পান করে বলি শোন হে বৎসগণ খোদার ওয়াস্তে ভুলে যাও সব নাসারার আচরণ

(৩৪) পশ্চিমা ঐ অশ্লীলতা ও নগ্নতা বেহায়ামি ডোবাবে তোদের, খোদার কঠোর গজব আসিবে নামি

(৩৫) ধ্বংস নিহত হবে মুসলিম বিধর্মীদের হাতে হবে নাজেহাল, ছেড়ে যাবে দেশ ভাসিবে রক্তপাতে

(৩৬) মুসলমানের জান-মাল হবে খেলনা- মুল্যহত রক্ত তাদের প্রবাহিত হবে সাগর স্রােতের মত

(৩৭) এরপর যাবে ভেগে নারকীরা পাঞ্জাব কেন্দ্রের ধন সম্পদ আসিবে তাদের দখলে মুমিনদের

টীকা: এখানে পাঞ্জাব কেন্দ্রের বলতে কাশ্মীর মনে করা হয়।

(৩৮) অনুরূপ হবে পতন একটি শহর মুমিনদের তাহাদের ধনসম্পদ যাবে দখলে হিন্দুদের

টীকা: ১৯৪৮ সালে মুসলিম সুলতান নিজামের অধীনস্ত হায়দারাবাদ শহরটি দখল করে নেয় হিন্দুরা। সে সময় প্রায় ২ লক্ষ মুসলমানকে শহীদ করে মুশরিক হিন্দুরা, ১ লক্ষ মা বোনের ইজ্জত লুণ্ঠন করে, হাজার হাজার মসজিদ বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়। শুধু নিজামের প্রাসাদ থেকে নিয়ে যায় ৪ ট্রাক সোনা গয়না। আর অনেকে বলেছেন এই শহর “আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ” অর্থাৎ মুসলমানরা কাশ্মীর জয় করার পর হিন্দুরা বাংলাদেশ দখল করবে।

(৩৯) হত্যা, ধ্বংসযজ্ঞ সেখানে চালাইবে তারা ভারি ঘরে ঘরে হবে ঘোর কারবালা ক্রন্দন আহাজারি

(৪০) মুসলিম নেতা-অথচ বন্ধু কাফেরের তলে তলে মদদ করিবে অরি কে সে এক পাপ চুক্তির ছলে

টীকা: বর্তমান সময়ে এই উপমহাদেশে এ ধরনের নেতার অভাব নেই। যারা উপর দিয়ে মুসলমানদের নেতা সেজে থাকে, কিন্তু ভেতর দিয়ে কাফিরদের এক নম্বর দালাল। সমগ্র ভারতে এর যথেষ্ট উদাহরণ আছে, উদাহরণ আছে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও।

(৪১) প্রথম অক্ষরেখায় থাকিবে শীনে’র অবস্থান পঞ্চাশতম অক্ষরে থাকিবে নূন’ ও বিরাজমান/ ঘটিবে তখন এসব ঘটনা মাঝখানে দু’ঈদের + ধিক্কার দিবে বিশ্বের লোক জালিম হিন্দুদের

(৪২) মহরম মাসে হাতিয়ার হাতে পাইবে মুমিনগণ ঝঞ্বারবেগে করিবে তাহারা পাল্টা আক্রমণ

(৪৩) সৃষ্টি হইবে ভারত ব্যাপিয়া প্রচণ্ড আলোড়ন ‘উসমান’ এসে নিবে জেহাদের বজ্র কঠিন পণ

(৪৪) ‘সাহেবে কিরান-‘হাবীবুল্লাহ’ হাতে নিয়ে শমসের খোদায়ী মদদে ঝাপিয়ে পড়িবে ময়দানে যুদ্ধে  টীকা: এখানে মুসলমানদের সেনাপতির কথা বলা হয়েছে। শনি ও বৃহস্পতিগ্রহ অথবা শুক্র ও বৃহস্পতি গ্রহের একই রৈখিক কোণে অবস্থানকালীন সময়ে যে যাতকের জন্ম অথবা এ সময়ে মাতৃগর্ভে যে যাতকের ভ্রুনের সঞ্চার ঘটে তাকে বলা হয় সাহেবে কিরান বা সৌভাগ্যবান। সেই মহান সেনাপতির নাম বা উপাধি হবে ‘হাবীবুল্লাহ’।

(৪৫) কাপিবে মেদিনী সীমান্ত বীর গাজীদের পদভারে ভারতের পানে আগাইবে তারা মহারণ হুঙ্কারে  টীকা: আক্রমণকারীরা ভারত উপমহাদেশের হিন্দু দখলকৃত এলাকার বাইরে থাকবে এবং হিন্দু দখলকৃত এলাকা দখল করতে হুঙ্কার দিয়ে এগিয়ে যাবে।

(৪৬) পঙ্গপালের মত ধেয়ে এসে এসব ‘গাজীয়ে দ্বীন’ যুদ্ধে জিতিয়া বিজয় ঝাণ্ডা করিবেন উড্ডিন

(৪৭) মিলে এক সাথে দক্ষিণী ফৌজ ইরানী ও আফগান বিজয় করিয়া কবজায় পুরা আনিবে হিন্দুস্তান

টীকা: হিন্দুস্তান সম্পূর্ণরূপে মুসলমানদের দখলে আসবে।

(৪৮) বরবাদ করে দেয়া হবে দ্বীন ঈমানের দুশমন অঝোর ধারায় হবে আল্লা’র রহমাত বরিষান

(৪৯) দ্বীনের বৈরী আছিল শুরুতে ছয় হরফেতে নাম প্রথম হরফ গাফ সে কবুল করিবে দ্বীন ইসলাম  টীকা: ছয় অক্ষর বিশিষ্ট একটি নাম যার প্রথম অক্ষরটি হবে ‘গাফ’ এমন এক প্রভাবশালী হিন্দু ইসলাম গ্রহণ করে মুসলিম পক্ষে যোগদান করবেন। তিনি কে তা এখন বুঝা যাচ্ছে না।

(৫০) আল্লা’র খাস রহমাতে হবে মুমিনেরা খোশদিল হিন্দু রসুম-রেওয়াজ এ ভূমে থাকিবে না এক তিল  টীকা: ভারত বর্ষে হিন্দু ধর্ম তো দূরে হিন্দুদের কোন রসম রেওয়াজও থাকবে না। (সুবহানাল্লাহ)

(৫১) ভারতের মত পশ্চিমাদেরও ঘটিবে বিপর্যয় তৃতীয় বিশ্ব সমর সেখানে ঘটাইবে মহালয়

টীকা: বর্তমান সময়ে স্পষ্ট সেই তৃতীয় সমরের প্রস্তুতি চলছে। অর্থ্যাৎ সমগ্র বিশ্ব জুড়ে মুসলমাদের বিরুদ্ধে কাফিররা যুদ্ধ করছে তথা জুলুম নির্যাতন করছে। এই জুলুম নির্যাতনই তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধে রুপ নিয়ে একসময় তাদের ধ্বংসের কারণ হবে। এখানে বলা হচ্ছে মহালয় বা কেয়ামত শুরু হবে যাতে পশ্চিমারা ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে।

(৫২) এ রণে হবে ‘আলিফ’ এরূপ পয়মাল মিসমার মুছে যাবে দেশ, ইতিহাসে শুধু নামটি থাকিবে তার

টীকা: এ যুদ্ধের কারণে আলিফ = আমেরিকা এরূপ ধ্বংস হবে যে ইতিহাসে শুধু তার নাম থাকবে, কিন্তু বাস্তবে তার কোন অস্তিত্ব থাকবে না। বর্তমানে মুছে যাওয়ার আগাম বার্তা স্বরূপ দেশটিতে আমরা বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং অর্থনৈতিক মন্দা চরমভাবে দেখতে পাচ্ছি।

(৫৩) যত অপরাধ তিল তিল করে জমেছে খাতায় তার শাস্তি উহার ভুগতেই হবে নাই নাই নিস্তার কুদরতী হাতে কঠিন দণ্ড দেয়া হবে তাহাদের ধরা বুকে শির তুলিয়া নাসারা দাড়াবে না কভু ফের  টীকা: এখানে স্পষ্ট যিনি এই শাস্তি দিবেন তা হবে কুদরতি হাতে। যদিও বা আল্লাহ তায়ালার ক্ষেত্রে কুদরত, নবী রাসূলের ক্ষেত্রে মুজিজা, এবং ওলী আল্লাহ গণের ক্ষেত্রে কারামত শব্দ ব্যাবহৃত হয়। এখানে কাফিরদের শাস্তি কোন ওলী আল্লাহ কারামতের মাধ্যমেই দিবেন এটাই বুঝান হয়েছে। এই শাস্তির কারণে নাসারা বা খ্রিস্টানরা আর কখনই মাথা তুলে দাড়াতে পারবে না।

(৫৪) যেই বেঈমান দুনিয়া ধ্বংস করিল আপন কামে নিপাতিত শেষকালে সে নিজেই জাহান্নামে

(৫৫) রহস্যভেদী যে রতন হার গাথিলাম আমি তা – – যে গায়েবী মদদ লভিতে, আসিবে উস্তাদসম কাজে।

(৫৬) অতিসত্বর যদি আল্লা’র মদদ পাইতে চাও তাহার হুকুম তালিমের কাজে নিজেকে বিলিয়ে দাও  টীকাঃ বর্তমানে সমস্ত ফিতনা হতে হিফাজত হওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে সমস্ত হারাম কাজ থেকে খাস তওবা করা। সেটা হারাম আমল হোক কিংবা কাফের মুশরিক প্রনিত বিভিন্ন নিয়ম কানুন হোক।

(৫৭) ‘কানা জাহুকার’ প্রকাশ ঘটার সালেই প্রতিশ্রুত ইমাম মাহাদি দুনিয়ার বুকে হবেন আবির্ভূত

(৫৮) চুপ হয়ে যাও ওহে নেয়ামত এগিও না মোটে আর ফাঁস করিও না খোদার গায়বী রহস্য — আসরার এ কাসিদা বলা করিলাম শেষ ‘কুনুত কানয’ সালে (অদ্ভুত এই রহস্য গাঁথা ফলিতেছে কালে কালে)

Add a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *